অভিমানী মন

অভিমানী মন
-সোমা বৈদ্য

 

 

নমীতার মনটা আজ চুপ চাপ সকাল থেকে কিছু একটা ভাবছে।
কবির: নমীতা হঠাৎ আমায় ফোন করছো?
নমীতা : চলো না আজ ঐ কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছটির নিচে বসি। আগে তো প্রায় যেতাম তুমি আর আমি কত না কথা বলতাম রাগ অভিমানের।
কবির: আচ্ছা চলো তবে যাই। বলো কখন আসবে তুমি। আমিও নাহয় তখনই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে আসব ফুল গাছ টির নিচে।
নমীতা: আমিতো এখনি যেতে চেয়েছিলাম আর বেরিয়েও পড়েছি।তাই তোমায় ফোন করলাম।
ভেবেছিলাম এক সাথে যাব।
কবির: ও আচ্ছা আমায় একটু আগে বলতে তাহলে হয়তো আজ ছুটি নিতাম।
নমীতা : না তোমার যদি আজ আসতে প্রবলেম থাকে তাহলে আজ আর এসো না অন্য একদিন না হয় আসবো তোমার সাথে।
কবির: তা বেশ বলেছ তুমি।
নমীতা মনে মনে ভাবে আজ কতটা পালটে গেছো তুমি।আগে আমার সাথে দেখা করার জন্য পাগল ছিলে।আর ঐ কৃষ্ণচূড়া গাছ টা ছিলো আমাদের সাক্ষী তোমার আমার ভালোবাসার।কি করে ভুলে গেলে তুমি আজকের দিনটা।বলতেই চোখে জল এলো।একাএকাই বসে থাকে ঐ গাছটার নিচে।আর গাছ টিকে চিৎকার করে বলে তুমি তো একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছ বহু বছর ধরে ।তুমি তো পাল্টে যাও না ।সব সময় নিজেকে সাজিয়ে রাখো ফুলে ফুলে।তুমি তো ভুলে যাও না ফুল ফোটাতে।তুমিতো ভুলে যাওনা তোমার ফুলের গন্ধে মানুষের মন ভরাতে।
তবে মানুষ কেন ভুলে যায় কথা দিয়ে সে কথা রাখতে।
কবির হঠাৎ পিছন থেকে কাঁধে হাতটা রাখে।
নমীতা চমকে ওঠে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে তার প্রিয় মানুষটি।হাতে এক গুচ্ছ গোলাপ ফুলের তোড়া ।
কবির: কি ভেবেছিলে আমি ভুলে গেছি এই দিনটার কথা তাই তো ?কি করে ভুলবো বলো আজকে তোমায় দেয়া কথাটা এই গাছটাকে সাক্ষী রেখে তোমার আমার ভালোবাসার কথা বলেছিলাম।
এ জীবন থাকতে হয়তো তা আর ভোলার নয়।
নমীতাকে কথাটা বলতেই কবিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।আর বলে আমি ভেবেছিলাম তুমি তোমার কাজের চাপে হয়তো আমায় ভুলে গেছো এই দিনটার কথা । আজ আমাদের ভালোবাসার এক বছর পেড়িয়ে গেলো।
কবির : না ভুলিনি তাই তো আজ অফিস ছুটি নিয়েছিলাম আজ সারাটা দিন তোমায় দেবো বলে।
নমীতা : কেন আমায় বলোনি ফোন করে যখন আসার কথা বললাম তো?
কবির: তোমায় একটু চমকে দেবো বলে।
নমীতা :এতো ভালোবাসো তুমি আমায়?
কবির: হ্যাঁ বাসি বাসি আর সারাজীবন বাসবো এই কৃষ্ণচূড়া সাক্ষী তার।আর এ দেহে নিঃশ্বাস আছে যতদিন আমি শুধুই তোমার।
নমীতা : এতোটা ভালোবাসো আমায়?
কবির: হ্যাঁ
নমীতা:হাজার ব্যস্ততার মাঝে আমায় ভালে যাবে না তো কবির?
কবির: কি করে ভুলবো তোমায় তুমি তো আছো এ হৃদয় মাঝে এক মৃত্যু ছাড়া তোমার থেকে আমায় আলাদা করতে পারবে না।
নমীতা: এতোটা ভালোবাসো তুমি আমায়?
কবির: নমীতার হাতটা ধরে কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছটির নিচে নিয়ে যায় আর আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে আমি তোমায় ভালোবাসি নমীতা।
নমীতা: কবির বুকে মাথা রেখে বলে আমিও তোমায় খুব ভালোবাসি কবির।।
ভালোবাসা বোধহয় এমনি হয় কিছু অনুভূতি কিছু না বলা কথা। কিছুটা পাগলামী।।

Loading

One thought on “অভিমানী মন

Leave A Comment